1. nasiralam4998@gmail.com : admi2017 :
বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন

কানপুরে বাংলাদেশের ‘নাক কাটা’

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৯ বার

ইয়ে ম্যাচ ড্র হো না চাহিয়ে’-খোদ ভারতীয় ভক্তরা এমন কথা বলছেন। ততক্ষণে বাংলাদেশের ব্যাটারদের উইকেটের মিছিল চলছিল। প্রথম ইনিংসে রোহিত শর্মার দল জয়ের সুবাস তৈরি করেছিল, সেই সুবাসে শেষ দিন গ্রিন পার্ক কেঁপেছে গগনবিদারি গর্জনে। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল গ্যালারি।

হারের চেয়েও বেশি আলোচনা হারের ধরন নিয়ে। বৃষ্টির কারণে দুইদিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। প্রথম দিন খেলা হয়েছে টেনেটুনে এক তৃতীয়াংশ সময়। সবমিলিয়ে আড়াই দিনের খেলায় কানপুরে বাংলাদেশের নাক কাটা গেলো এক সেশন আগেই। মাত্র ৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারত ৭ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। তাতে আরও পোক্ত হয় ভারতের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পথ।

রান তাড়া করতে নেমে সময় নষ্ট করেনি ভারত। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২ ওভারে ১৮ রান তুলে নেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা-জয়সওয়াল। ৮ রানে রোহিত ফিরলে দলীয় ১৮ রানে উইকেটের পতন ঘটে। শুভমান গিল এসে ফেরেন মাত্র ৬ রানে। নতুন ব্যাটার বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন জয়সওয়াল। জয় থেকে যখন ৩ রান দূরে তখন জয়সওয়াল আউট হন ৪৫ রানে। কোহলি ২৮ ও পন্ত ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

হারের শঙ্কা মাথায় নিয়ে পঞ্চম দিন মাঠে নামে বাংলাদেশ। স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২৬ রান। উইকেটে ছিলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম (১০) ও সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক (০)। দলীয় রান ১০ যোগ না হতে পতনের শুরু। মুমিনুল ফেরেন মাত্র ২ রানে। নতুন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত এসে প্রতিরোধের আভাস দেন সাদমানকে সঙ্গে নিয়ে। দুজনে ৫৫ রানের জুটি গড়েন।

১৯ রানে শান্ত আউট হতে উইকেটের মিছিল শুরু। ৯১ থেকে ১৪৬ – এই ৫৫ রানে বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। একে একে ফেরেন লিটন দাস (১), সাকিব আল হাসান (০) মেহেদি হাসান মিরাজ (৯) তাইজুল ইসলাম (০) ও মুশফিকুর রহিম (৩৭)।  শেষ দিকে একাই লড়ছিলেন মুশফিক; কিন্তু সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি।  শেষ উইকেটে তার আউটে বাংলাদেশের ইনিংসের ইতি ঘটে। ভারতের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও জসপ্রীত বুমরাহ।

বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ২৩৩ রান। উইকেট বিবেচনায় এই রান যথেষ্ট কম ছিল। সময় চলে যাওয়ায় ভারত খেলার ধরন পাল্টে ফেলে টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলে। তার ফল পেলো হাতেনাতে। মাত্র ৩৪.৪ ওভারে তারা ২৮৫ রান তোলে। টেস্ট ক্রিকেটে এত কম ওভারে এত রান এর আগে কখনো হয়নি।

দ্রুত রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। ৫২ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে ২৬ রান তুলতে। দিন শেষে মেহেদি হাসান মিরাজ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য নিরাপদ ব্যাটিং করা। কিন্তু সেটি পারলেন কই!

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে হারসহ টেস্ট ক্রিকেট বাংলাদেশের বেশকিছু বিব্রতকর পারফরম্যান্স।  কিন্তু এখন সময়টা ছিল কিছু ভিন্ন। ভারতের বিমান ধরার আগে বাংলাদেশকে সংবর্ধনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারণ, পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়! ভারতের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ২০১৯ সালে নাস্তানাবুদ হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে এসে এমন পরাজয় প্রশ্নবিদ্ধ করবে শান্তদের মানসিকতা।

চেন্নাইয়ে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছিলে ২৮০ রানের বড় ব্যধানে হেরে। সেটি শেষ হয়েছে চারদিনে।  বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন ভুল থেকে শেখার কথা। কিন্তু কানপুরে আরও প্রয়োজনীয় মুহুর্তে নিশ্চিত ড্র ম্যাচে হেরে বাংলাদেশ দল যেন বোঝালো, তাদের দ্বারাই এমন হার সম্ভব!

দুই মাসে বাংলাদেশ দেখেছে মুদ্রার দুই পিঠ। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় টাইগারদের নিয়ে বেড়েছিল উচ্ছ্বাস; ভারতে এসে সেই আশায় যেন গুঁড়েবালি।

Views: 3

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..