৪ বছরের শিশু জুবায়েদের কাছে তার বাবাই যেন সব। সেই বাবা নেই আজ ১৭ দিন হয়ে গেল অথচ এখনও টের পায়নি তার বাবা আর বেঁচে নেই। জুবায়েদের আশা বাবা অফিস থেকে আসবে! বাবার কথা বলতেই বলে, বাবা এখন অফিসে, রাতে আসবে, আমার সাথে ঘুমাবে। প্রতিদিন রাতে বাবার জন্য অপেক্ষা করে ঘুমাতে যায় সে, নিজের বালিশের পাশে সাজিয়ে রাখেন বাবার বালিশটাও, এভাবেই অপেক্ষার প্রহর যেন প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ অবুঝ শিশুর।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন মীর জুয়েল মিয়া। জুয়েল মিয়া যুবদলের কর্মী। সরকার পতন আন্দোলনে প্রথম থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল।
জুয়েল মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মিংধই কাকদাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কৃষক আব্দুল হাইয়ের ছেলে। পরিবারে ৩ বোন ২ ভাইয়ের মধ্যে জুয়েল সবার বড়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে কাজ করেন স্থানীয় একটি কারখানায়।
জুয়েলের বাবা আব্দুল হাই বলেন, জুয়েল ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। জুয়েলের আয়েই সংসার চলতো। হঠাৎ করে জুয়েলের এমন মৃত্যুতে পুরো পরিবার দিশেহারা।
তিনি বলেন, ১৬ বছর আগে জুয়েল বিয়ে করেন। বিয়ের ১২ বছর পর জুবায়েদের জন্ম হয়। বাবার খুব আদরের ছিল জুবায়েদ। অথচ সে এখনও বুঝতেই পারছে না তার বাবা নেই। জুয়েলের খুব ইচ্ছে ছিল ছেলেকে ইসলামী স্কলার বানাবে। হঠাৎ জুয়েলের মৃত্যুতে ছেলে জুবায়েদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন সংশয় তৈরি হয়েছে।
গাজীপুর জেলা যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর আন্দোলনে নিয়মিত অংশ নিতো। গত ৫ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে গুলিতে নিহত হয় জুয়েল। এ পরিবারটির সামনে এখন অন্ধকার। শ্যালিকাসহ এ শিশুটি এখন তার আশ্রয়েই আছে।
Views: 2
Leave a Reply