দীর্ঘ একমাসের উন্মাদনা শেষে অবশেষে পর্দা নামতে যাচ্ছে কোপা আমেরিকার ২০২৪ সালের আসরের। ১৬ দলের লড়াই শেষে ফাইনালের মঞ্চে উপনীত হয়েছে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া। দুই দলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের মাঝে দর্শকদের চোখ থাকবে দুই অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও জেমস রদ্রিগেজের দিকেও।
এবারের আসরটা মেসি ও রদ্রিগেজ দুজনের জন্যেই বিশেষ। মেসির কোপার শেষ আসর এবং রদ্রিগেজের জন্য নিজেকে ফিরে পাওয়ার মঞ্চ। দুজন দুই মেরুরু। ফাইনাল মহারণের আগে দুজনের অতীতের গল্পটা ঘুরে আসা যাক।
মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এবারের আসরটা আর্জেন্টিনার জন্য বিশেষ কিছু। এবার তারা চ্যাম্পিয়ন হলেই ১৬তম শিরোপার উৎসবে মেতে উঠবে। যা তাদেরকে এককভাবে শীর্ষে তুলে দিবে, উরুগুয়ে নেমে যাবে দুইয়ে। এই কোপার মঞ্চ দিয়েই ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপার আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন মেসি। এরপর বিশ্বকাপ জয়ের পর এখন আবার সেই একই মঞ্চে দ্বিতীয় শিরোপার সামনে।
দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর মঞ্চে মেসি ফর্মের চূড়ায় ছিলেন। তবে সময়ের সঙ্গে তাকে ঘিরে ধরেছে ইনজুরি আর অফফর্ম। তবে এখনই খেলা ছাড়ার চিন্তা নেই আর্জেন্টিনা অধিনায়কের। বরং দুই সতীর্থ নিকোলাস ওতামেন্ডি এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বিদায়ের মঞ্চটাই রাঙাতে চান আরেকবার।
সেই লক্ষ্যে শুরু থেকে মাঠে নামলেও মেসি নিজেকে খুঁজে পাননি। অবশেষে সেমিফাইনালে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে গোল করে অবদান রাখেন আটবারের বর্ষসেরা তারকা। দুই সতীর্থকে বিদায়ের মঞ্চটাই তার শেষ কোপা জানিয়ে ম্যাচের পর মেসি বলেন, ‘আমি খেলাটি খুব উপভোগ করছি। তবে এটা আমার শেষ আসর। যেমন ফিদেও (ডি মারিয়া) এবং ওতার (ওতামেন্ডি) এটি শেষ লড়াই।’
এমন একটি মহামঞ্চে দাঁড়িয়ে আছেন মেসি, যেখানেই ২০১৬ সালে চিলির বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পর ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এটা যদি সত্যিই মেসির শেষ কোপা হয়, তাহলে সকলেই চাইবেন মেসি যেন নিজের স্টাইলেই শিরোপাটা উচিয়ে ধরেন।
কলম্বিয়ার অধিনায়ক রদ্রিগেজের গল্পটা অন্যরকম। তিনি প্রথম পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন ২০১৪ সালে। ১০ বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ঝলক দেখিয়ে আসরে সর্বোচ্চ গোলের মালিক বনে গেছিলেন রদ্রিগেজ। তবে উরুগুয়ের সঙ্গে হেরে শেষ ষোলোতে বিদায় নিতে হয় তার দলকে।
বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করে স্পেনের সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ডাক পান রদ্রিগেজ। রিয়াল তাদের ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ দামি খেলোয়াড় হিসেবে সাইন করিয়েছিল কলম্বিয়ার অধিনায়ককে। তবে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি রদ্রিগেজ। বাধ্য হয়ে তাকে ছেড়ে দেয় রিয়াল।
এরপর বায়ার্ন মিউনিখ এবং অলিম্পিয়াকোস ঘুরে নাম লিখিয়েছেন ব্রাজিলিওয়ান ক্লাব সাও পাওলোতে। ফর্ম পড়তির কারণে আগের কোপায় সুযোগ না পাওয়া রদ্রিগেজ এবার একাই দলকে টেনে তুলেছেন ফাইনালে। গোল করেছেন দুটি, সহায়তা করেছেন ৬টিতে।
রদ্রিগেজ অধিনায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর কলম্বিয়া ২৮ ম্যাচের একটিও হারেনি। ফাইনাল জিতলে সেটা গিয়ে দাঁড়াবে ২৯-এ। প্রতিভার অপচয়ের জন্য বিখ্যাত রদ্রিগেজ কি এবার পারবেন নিজেকে আরেকবার নতুন করে জানা দিতে? শিরোপা হবে যেটার সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক।
Views: 4
Leave a Reply