আফগানিস্তানে আফিম চাষ কমে যাওয়ার কারণে মিয়ানমার এখন বিশ্বে আফিমের সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমার এ বছর আনুমানিক ১ হাজার ৮০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদন করেছে। আফগানিস্তানে নিষেধাজ্ঞার কারণে আফিমের উৎপাদন ৯৫ শতাংশ কমে ৩৩০ টনে নেমে এসেছে।
হেরোইন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় আফিম। বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি এবং সামরিক অভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক কষ্ট ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে মিয়ানমারে আফিমের উৎপাদন বেড়েছে বলে বিশ্বাস করে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধবিষয়ক সংস্থার আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বলেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সুশাসন ব্যাহত হয়। এমন পরিস্থিতিতে আফিম চাষে আগ্রহী হওয়া ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের কিছুই করার ছিল না।
সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কৃষকরা বর্তমানে আফিম চাষ করে ৭৫ শতাংশ বেশি আয় করছেন। কারণ কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি আফিম ৩৫৫ ডলারে কেনা হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে আফিম চাষের জমির পরিমাণ ৪৭ হাজার হেক্টরেরও বেশি।
জেরেমি ডগলাস বলেন, অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে অনেক শ্রমিক শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে আফিম চাষে যুক্ত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফিম চাষ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের সীমান্ত অঞ্চলে। চিন ও কাচিন রাজ্যেও আফিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। অধিক পরিশীলিত চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে আফিমের ফলন হেক্টর প্রতি ১৬ শতাংশ বেড়ে ২২.৯ কিলোগ্রাম হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র জাতিগত-সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ের জেরে দেশটিতে আফিম চাষ আরও সম্প্রসারণ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেরেমি ডগলাস।
Views: 8
Leave a Reply