বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও বাসে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি প্রধান বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বিআরটিসি বাসে আগুন দেওয়াসহ ২৮ অক্টোবরের পর থেকে চলমান অবরোধে চালানো নাশকতার দায় স্বীকার করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ধরনের নাশকতা করা ঠিক হয়নি বলে তারা মন্তব্য করেছেন।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রথমত যেসব কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের কাছে আছেন, তারা প্রথমে বলছিলেন যে, নাশকতা আমাদের দলের লোকজন করেননি, অন্য কেউ করেছে। এটা নিয়ে তারা সন্দিহান ছিলেন। তখন আমাদের কাছে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ, স্মার্ট টিমের করা ভিডিও তাদেরকে দেখানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা স্টেজে ছিলেন, সমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন। ভিডিওতে তারা দেখেছেন, সমাবেশের দিন মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কে কী রোল প্লে করেছেন। সুলতান সালাউদ্দিন কোথায় লাঠি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, রবিউল ইসলাম নয়ন কোথায় আগুন লাগাচ্ছেন, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মিন্টুর বাসা থেকে গানপাউডার পেয়েছি। এসব কিছু দেখার পরে তারাও (কেন্দ্রীয় নেতা) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এটা ঠিক হয়নি।
নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী কারা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা হয়ত মনে করছেন, বাংলাদেশের কয়েকটা বিচ্ছিন্ন স্থানে আগুন লাগালেই ভয় পেয়ে যাবে অথবা পুলিশ ডিমোরালাইজ হবে, এটা ঠিক না। পুলিশ বাহিনীর কাজ হচ্ছে, জনগণের জাল-মালের নিরাপত্তা দেওয়া। সাধারণ মানুষের চলাচলে যেন কোনো বাধা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ, থানা পুলিশ ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে, ছদ্মবেশে ঘোরাফেরা করছে। বাসে যাত্রীর ছদ্মবেশে পুলিশ ঘুরছে। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে চায়, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এসব ঘটনায় যারা জড়িত, তাদেরকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে। কয়েকদিন আগে আমাদের ডিএমপি কমিশনার তা ঘোষণা করেছেন। নাশকতাকারীকে ধরিয়ে দিলেই ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, অনেক সময় দেখবেন, একটা লোকের একটি বাস আছে। এটা দিয়ে তার সংসার চলে। এই বাসটিতে যখন আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, তখন তার জীবন শেষ হয়ে যায়। পরিবার নিয়ে রাস্তায় নেমে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। অতএব আমি মনে করি, সবাই মিলে সাধারণ মানুষের জান-মাল রক্ষা করতে হবে। সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে। কেউ যেন কোনোভাবে হামলা করতে না পারে, সেদিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে, তাদের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের শিগগিরই আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব।
সমাবেশের দিন এবং হরতাল ও অবরোধে গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির লালবাগ ও মতিঝিল বিভাগ। এ বিষয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। অংশগ্রহণকারী অনেকের নাম পেয়েছি৷ তাদের মধ্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সাইদ হাসান মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে ৮ কেজি গান পাউডার উদ্ধার করেছি। মিন্টু স্বীকার করেছেন, বাশার এবং মাসুদকে দিয়ে এগুলো তৈরি করেন তিনি। রবিউল ইসলাম নয়ন ও সুলতান সালাউদ্দিন যে সহায়তা করেছেন, তিনি সেটিও স্বীকার করেছেন।
Views: 1
Leave a Reply