তিন ভাই-বোনের মধ্যে পলাশ দ্বিতীয়। এইচএসসি পাসের পর বড় বোন ঋতুর বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র ছোট ভাই পিয়াস হোসেন পাঁচকমলাপুর-আলিয়াটনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। পলাশ নিজেও একই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিক ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন।
পলাশ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা একজন বর্গাচাষি। ফসল ফলানোর জন্য শ্রমিক কম হওয়ায় তিনি ও তাঁর বাবা কাজ করতেন। পাশাপাশি অন্যের জমিতেও শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। স্কুল-কলেজে যাওয়ার আগে সকালে পানের বরজে দৈনিক ১০০ টাকা মজুরিতে খণ্ডকালীন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। স্কুলজীবন থেকে এভাবে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষকদের সহযোগিতাও পেয়েছেন। তিনি বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে সার্জারি কনসালট্যান্ট হতে চান তিনি। তাঁর লক্ষ্য, চিকিৎসক হয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করবেন। মা–বাবার মুখে হাসি ফোটাবেন।
পলাশ আরও বলেন, ২৬ মার্চ থেকে মেডিকেলে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এখন ঢাকায় যাতায়াত, ভর্তি ফি, থাকা-খাওয়াসহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাবার সেই টাকা দেওয়ার মতো বর্তমানে সামর্থ্য নেই।
পলাশের বাবা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ জন্য আমি খুশি হয়েছি। কিন্তু ভর্তি হতে যে খরচ লাগবে, সেই খরচ জোগান দেওয়ার সামর্থ্য নেই আমার। খুবই চিন্তায় আছি। দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়।’
পলাশের মা রেক্সোনা খাতুন বলেন, সংসারের দৈনন্দিন খরচ মেটানোই যেখানে কষ্টকর, সেখানে ছেলেকে কীভাবে মেডিকেলে ভর্তি করাবেন, পড়ালেখার খরচ জোগাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
সুত্রঃ প্রথম আলো
Leave a Reply