রানের হিসেবে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বড় জয় পাওয়ার পর এবার উইকেটের হিসেবেও সবচেয়ে বড় জয় পেল বাংলাদেশ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশ কখনোই প্রতিপক্ষকে ১০ উইকেটে হারাতে পারেনি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে সেই অপেক্ষা ফুরালো। অতিথিদের মাত্র ১০১ রানে আটকে বাংলাদেশ সেই রান তাড়া করে সবকটি উইকেট হাতে রেখে। এর আগে প্রথম ওয়ানডেতে ১৮৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। যা ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। ওই ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ কেবল ব্যাটিং করার সুযোগ ছিল। ৩৪৯ রান তুলে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির বাগড়ায় সেদিন ম্যাচে কোনো ফল বের হয়নি।
আজ তৃতীয় ম্যাচ জিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ একটি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল এবং একবার দুই দলের সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়েছিল। ঘরের মাঠে আইরিশদের হেসেখেলে হারিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো তাদের বিপক্ষে জিতে নিয়েছে ওয়াসডে সিরিজ।
এ ম্যাচে জোড়া ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। প্রথমত, পেসারদের হাত ধরেই প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের ১০ উইকেটের সবকটিই নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। যা বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রথম। হাসান মাহমুদ প্রথমবার ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫ উইকেট পেয়েছেন। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ৩ ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী ২ উইকেট পেয়েছেন।
দ্বিতীয়, ১০ উইকেটে জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রথম। এর আগে ৯ উইকেটে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে পাঁচ ম্যাচে। প্রতিবারই ১০ উইকেটে জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু উদ্বোধনী জুটি ভাঙায় রেকর্ড গড়া হয়নি। এবার সিলেটে বাংলাদেশের জয় রাঙাল ১০ উইকেটে।
পেসাররা জয়ের ভিত গড়ে ছিলেন শুরুতেই। হাসান মাহমুদ ৫ উইকেট নিয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। এছাড়া তাসকিন ও ইবাদত রাখেন অবদান। নিজের অষ্টম ম্যাচ খেলতে নেমে ফাইফারের স্বাদ পেয়েছেন হাসান। মোস্তাফিজের পরিবর্তে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেছেন এ পেসার। তবে এ ম্যাচে পেসারদের মধ্যে অদ্ভুত মিল পাওয়া গেছে।
যখন তারা আক্রমণে এসেছেন তখনই জোড়ায় জোড়ায় সাফল্য পেয়েছেন। হাসান পঞ্চম ওভারে নিজের প্রথম উইকেটের পর দশম ওভারে জোড়া আঘাত করেন। ১৯তম ওভারে ইবাদত হোসেন পরপর দুই বলে ফেরান লরকান টার্কার ও জর্জ ডকরেলকে। তাসকিন কেন বাদ থাকবেন? ২২তম ওভারে অ্যান্ডি ম্যাকব্রিরনে ও মার্ক আরিয়ারকে এক বলের ব্যবধানে ড্রেসিংরুমের পথে ফেরান। এরপর হাসান মাহমুদের পালা। নিজের সপ্তম ও অষ্টম ওভার মিলিয়ে তিন বলের ব্যবধানে জোড়া উইকেট পান। তাতেই ডানহাতি পেসার পেয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ফাইফারের স্বাদ। ৩২ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের জয়ের নায়ক।
লক্ষ্য আহামরি বড় ছিল না। বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি কাজটা করে দেন সহজে। তামিম ৪১ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন ৫ চার ও ২ ছক্কায়। লিটন ৩৮ বলে ৫০ রান করেন ১০ চারে। আয়ারল্যান্ডের বোলাররা অতিরিক্ত ১১ রান না দিলে তামিমেরও সুযোগ হতো ফিফটি তুলে নেওয়ার। হয়নি তাতে মন খারাপ কথা না বাংলাদেশের দলপতির।
কারণ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেভাবে দল জিতেছে তাতে বিশ্ব ক্রিকেটে আগ্রাসন দেখিয়ে ক্রিকেট খেলার বড় বার্তাই দিয়ে রেখেছে। ওয়ানডে ম্যাচ মানেই ১০০ ওভারের খেলা। অথচ এই ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে পঞ্চাশ ওভার খেলা হয়নি। আয়ারল্যান্ডকে ২৮.১ ওভারে অলআউটের পর ১৩.১ ওভারে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে খেলা হয়েছে ৪১.২ ওভার। আর মিনিটের হিসেবে? আয়ারল্যান্ড ব্যাটিং ছিল মাত্র ২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট। আর বাংলাদেশের খেলা ৫৯ মিনিটেই শেষ।
Views: 2
Leave a Reply