অপেক্ষার প্রহর সব সময়ই ক্লান্তিকর। সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর। সেই শিরোপা আর শোকেসে তুলতে পারেনি তারা।
এই সময়ের মধ্যে ব্রাজিল মাত্র একবার সেমিফাইনাল খেলেছিল। তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল। সবশেষ আসরে বেলজিয়ামের কাছে হেরে শেষ আট থেকেই বিদায় নিয়েছিল তারা।
প্রতি আসরেই হেক্সা মিশন নিয়ে আসে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে পারে না। তবে এবার নেইমারের শেষ বিশ্বকাপে তারা শেষ পর্যন্ত যেতে বদ্ধ পরিকর। নেইমার-ভিনিসিউস-রদ্রিগো, রিচার্লিসন, রাফিনহাদের নিয়ে শিরোপা জেতার মতো শক্তিশালী দল নিয়েই কাতারে এসেছেন তিতে। যারা আগের চেয়ে আরও অভিজ্ঞ আরও ধারালো। যা তারা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ও অন্যান্য ম্যাচে প্রমাণ করেছে।
কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ যে ভেল্কিবাজীর বিশ্বকাপ। চারদিনেই বেশ কয়েকটি অঘটনের সাক্ষী হয়েছে ফুটবলপ্রেমীরা। সে কারণে যতো শক্তিশালী দলই হোক না কেন, স্বস্তি পাচ্ছেন না তারা। এই যেমন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও জিতলো সৌদি আরব। কেউ ভেবেছিল সৌদি জিতবে? বুধবার জার্মানির বিপক্ষে জাপানও ঠিক একই কায়দায় জিতলো। কেউ কি ভেবেছিল? গেল আসরের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দিলো মরোক্কো। সে কারণে হয়তো চেনা প্রতিপক্ষ সার্বিয়ার বিপক্ষে সতর্ক হয়েই খেলবেন তিতের শিষ্যরা।
বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে ব্রাজিলই একমাত্র দল যারা প্রতিটি আসরেই অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। অর্থাৎ বিশ্বকাপের ২২ আসরেই খেলছে তারা। তার ওপর লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়েছে তারা। ১৭ ম্যাচ খেলে একটিতেও হারেনি তারা। ১৪টি জয়, ৩টি ড্র। সর্বোচ্চ ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে।
সবশেষ তারা হেরেছিল ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে। এরপর থেকে অপরাজিত আছে সেলেসাওরা। সে কারণে সার্বিয়ার বিপক্ষে নিঃসন্দেহে ফেভারিট ব্রাজিল।
সার্বিয়া অবশ্য স্বাধীন হওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো খেলছে বিশ্বকাপে। আগের দুই আসরে গ্রুপপর্বের বাঁধা পেরুতে পারেনি তারা। এবার অবশ্য গ্রুপপর্বের গণ্ডি পেরোনের লক্ষ্য নিয়েই কাতার এসেছে তারা।
মজার বিষয় হলো রাশিয়া বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের গ্রুপে পড়েছিল তারা। সেখানে হেরেছিল ২-০ গোলে। তার আগে ২০১৪ সালে এক প্রীতি ম্যাচে হেরেছিল ১-০ গোলে।
তবে সার্বিয়ার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ ভালো। সম্প্রতি তারা নেশন্স লিগে উন্নতি করে ‘লিগ এ’ তে উঠেছে। তাছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল ঈর্শনীয়। আট ম্যাচের ছয়টিতে জিতে ও দুটিতে ড্র করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছিল তারা। এ যাত্রায় তারা ২-১ গোলে হারিয়েছিল পর্তুগালের মতো দলকেও।
দ্রাগান স্টোজকোভিচের শিষ্যরা সব ধরনের প্রতিযোগিতায় খেলা সবশেষ ১৬ ম্যাচে হার মেনেছে মাত্র দুটিতে।
তবে এবার তাদের সামনে ব্রাজিলের মতো শক্ত প্রতিপক্ষ। এই পরীক্ষায় তারা উতরাতে পারে কিনা দেখার বিষয়।
Views: 2
Leave a Reply