গণ-অর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ সেন্সর সনদ পেয়েছে। প্রথম সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা খন্দকার সুমন।
নির্মাতা এই প্রতিবেদককে জানান, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন পর্দায় চিত্রায়নের প্রয়াস থেকেই নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় আবর্তিত হয়েছে পুর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “সাঁতাও’’ এর কাহিনী। তিনি আরও জানিয়েছেন, শীঘ্রই মুক্তির দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, নদী অববাহিকার একটি শান্ত গ্রামকে উপজীব্য করে এগিয়েছে চলচ্চিত্রের কাহিনী। গ্রামের মানুষদের জীবন ও জীবিকার একমাত্র সহায় সেই নদীর বুকে একের পর বাঁধ নির্মাণ পাড়ের মানুষদের সংকটে ফেলে দেয়। উজানে বাঁধ দেয়ায় উর্বর ভাটি অঞ্চল পরিণত হয়েছে মরুভূমিতে, খেতে সেচ দিতে কৃত্রিম ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোনো উপায়ান্তর নেই কৃষকদের। পুরো সেচ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে থাকায় সাধারণ কৃষকরা কোণঠাসা। কৃষকদের এই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দাদন ব্যবসায়ী আর ক্ষুদ্র ঋণদাতা নানান সংগঠনগুলোও খুলে বসেছে নানা রমরমা ব্যবসা। এক দিকে কিস্তির চাপ, অন্য দিকে কৃষি-কাজের প্রতিকূল পরিবেশ-সব মিলিয়ে নাস্তনাবুদ কৃষকেরা গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে শহরে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে যোগ দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ নানা কাজে, কাওকে ফিরতে হচ্ছে লাশ হয়ে। এভাবেই এগোতে থাকে সিনেমার গল্প।
চলচ্চিত্রটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল এবং ফজলুল হক। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোঃ সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফরিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মোঃ হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং স্থানীয় মানুষদের অনেকে।
কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় আবর্তিত হয়েছে পুর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “সাঁতাও’’ এর কাহিনী।
‘সাঁতাও’-এর কাহিনী, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন নির্মাতা খন্দকার সুমন। সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট, টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ। শব্দ-গ্রহণ করেছেন নাহিদ মাসুদ। চিত্রগ্রহণ করেছেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন।
‘সাঁতাও’-এর আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ। আর গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী এবং লিমা হক। শিল্প-নির্দেশনায় ছিলেন রবি দেওয়ান। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আফ্রিনা বুলবুল। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ফাহিম রায়হান। কলাকুশলীদের রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন। ‘সাঁতাও’-এর পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।
দেশের প্রচলিত ঘরানার বাইরে গিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে গণমানুষকে সম্পৃক্ত করে অভূতপূর্ব এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ধরণের সাহসী নির্মাণের গল্প ভবিষ্যতের নির্মাতাদেরও স্বপ্ন দেখাবে, উৎসাহিত করবে।
Views: 6
Leave a Reply