1. nasiralam4998@gmail.com : admi2017 :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন

ধর্ষণ-হত্যার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১
  • ২১৭ বার
দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর
ফাইল ফটো

স্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গায় দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দেড়যুগ পর আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টা ও তার কিছু সময় পর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। রাতেই তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের মিন্টু ওরফে কালু (৫০) ও একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুল (৫০)।

এদিকে, বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে ১৮ বছর পর ন্যায়বিচার পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমের স্বজনরা।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দুজনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়। শনিবার ও রোববার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো তাদের দুজনের স্বজনেরা তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের দুজনের শেষ ইচ্ছা অনুয়ায়ী দুই পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তাদের পছন্দ মতো শনিবার গরুর কলিজা ও ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়েছে। রোববার গ্রিল ও নান রুটি আর সোমবার মুরগির মাংস ও দই মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারের নিরাপত্তার জন্য সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই গোটা এলাকায় পুলিশ ও র্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়। কারাগারের ১৩ জন অস্ত্রধারী কারারক্ষী দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন কারাগারের প্রধান ফটকে।

জেলার বলেন, রাতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই আসামিকে গোসল করানোর পর তাদের তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম। এরপর তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। পরে তাদের জমটুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়। রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে প্রথমে মিন্টু ওরফে কালু এবং এর ৫ মিনিট পরে আজিজ ওরফে আজিজুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরে কেতু কামার, মশিয়ার রহমান, লিটু হোসেন ও আজিজুর রহমান, কাদেরসহ ছয় জল্লাদ অংশ নেন। ফাঁসি কার্যকরের পর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসক টিম তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে কালু ও আজিজুলের সাত সদস্য লাশ নিতে কারাগারে আসেন। এ সময় তাদের দুজনের জন্য পৃথক দুটি অ্যাম্বুলেন্স সঙ্গে ছিল।

চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিবারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের সময় কালু ও আজিজুল সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে কাঁদতে থাকেন।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রায় লক্ষ্মীপুর ঈদগাহ মাঠে একসঙ্গে দুজনের জানাজা শেষে তাদের পৃথক পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয় রায় লক্ষ্মীপুর মাঠে। এ ঘটনায় খুনের পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অন্য দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট তা বহাল রাখেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখলেও অন্য আসামি সুজনকে বেকসুর খালাস দেন। চলতি বছরের ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুজন।

চলতি বছরের ২৭ জুলাই তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। আবেদন নামঞ্জুর সংক্রান্ত চিঠি ৮ সেপ্টেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ফাঁসির রায় কার্যকরের দিন নির্ধারণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।

২০০৭ সালের ১০ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

দর্শনা নিউজ 24/এইচ জেড

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..