1. nasiralam4998@gmail.com : admi2017 :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১১:০২ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী ওয়াসার ১৪৯ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৩৩ বার
২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ১৪৯ জন মাস্টার রোল (অস্থায়ী) কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ১৫ হাজার টাকা করে অন্তত ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী কর্মচারীদের অভিযোগ, রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ আরো কয়েকজন মিলে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

কর্মচারীরা বলেন, রাজশাহী ওয়াসায় মোট ২০৬ জন মাস্টার রোল (অস্থায়ী) কর্মচারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশেরও বেশি কর্মচারী নূন্যতম তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ ২০ বছর ধরে কর্মরত। কর্মচারীদের সংগঠন রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ আরো কয়েকজন মিলে ১৪৯ জন অস্থায়ী কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ১৫ হাজার টাকা করে অন্তত ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে ছয়মাসের মধ্যে চাকরি স্থায়ী করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর অতিবাহিত হতে চললেও এখন ভুক্তভোগী কর্মচারীরা তাদের টাকা ফেরত পাননি।

কর্মচারীদের আরেকটি অংশ বলছেন, চাকরি স্থায়ীকরণের প্রতিশ্রুতি এবং এজন্য আদালাতে রীট করার কথা বলে ১৪৯ জন কর্মচারীর প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ১৫ হাজার টাকা করে অন্তত ২০ লাখ টাকা নেয়া হয়। চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য ২০১৫ সালে আদালতে একটি রীট দায়ের করা হয়। এই রীট মামলার বাদী হলেন ওয়াসার পাম্প চালক সেলিম উদ্দিন। কিন্তু যোগাযোগ ও সমন্বয়হীনতার কারণে এই রীট মামলাটি ঝুলে রয়েছে। কারণ হিসেবে ভুক্তভোগী কর্মচারীরা বলছেন, ১৪৯ জন অস্থায়ী কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে কয়েজন মিলে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। আর রীট মামলাটি ঝুলিয়ে রেখেছেন।

ভুক্তভোগী কর্মচারীরা আরো জানান, রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির মেয়াদ বছর কয়েক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন না করে আবুল কালাম আজাদ হেলাল সভাপতি ও ইকবাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অবৈধভাবে সংগঠনটিকে করায়ত্ব করে রেখেছেন।

ভুক্তভোগী কর্মচারী জয়নাল হোসেন, নাহান হোসেন, মো: লিটন, মো: রনি, মো: মিণ্টুসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীর কর্মচারী। আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে অন্তত ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে আরো কয়েকজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপই নেননি। তাছাড়া কয়েক বছর আগেই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন না করেই আবুল কালাম আজাদ হেলাল সভাপতি ও ইকবাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অবৈধভাবে সংগঠনটিকে করায়ত্ব করে রেখেছেন। তারা আরো বলেন, এ ব্যাপারে ওয়াসা কর্তৃপক্ষও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ হেলাল বলেন, টাকা নেয়া হয়েছে ঠিক। তবে সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টাকা নেয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি। রীট দায়ের করা হয়েছে। এটা আদালতের বিষয়। আমাদের কিছুই করার নেই। এছাড়া কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে।

রাজশাহী ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, কর্মচারীরা একসঙ্গে টাকা দেননি। আবার সবাই একই সমপরিমাণ টাকা দেননি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাকরি স্থায়ীকরণে আদালতে রীট করা হয়েছে ২০১৫ সালে। এটি আদালতের বিষয়। আর টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।

তবে এ ব্যাপারে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দর্শনা নিউজ 24/এইচ জেড

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..