আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্স সরকার সেদেশের সংসদে এক বিল এনে ১৮ বছরের কম বয়সি মুসলিম মহিলাদের হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সী নারীরা প্রকাশ্যে হিজাব পরতে পারবে না।
বিতর্কিত এই বিল পাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক যদিও ফরাসি সরকার বলছে, বিচ্ছিন্নতাবাদ বিরোধী এই আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের সেক্যুলার ব্যবস্থাকে গতিশীল করা। কিন্তু সমালোচকরা বলছে, মূলত দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘুদের টার্গেট করতেই এমন আইন আনছে ফ্রান্সের সরকার। এদিকে, ফ্রান্সের তরুণ মুসলিম মহিলারা এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিম, অমুসলিম নারীরা এ বিলের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ফ্রান্সের মুসলিম নারীরা তাদের নাগরিক ও মানবাধিকারের ক্রমবর্ধমান লঙ্ঘন এবং মুসলিম নারীদের ইচ্ছাকে স্বীকৃতি জানাতে ফরাসী সরকারের অনীহার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে। মুসলিম নারীরা সাধারণত মাথা ঢাকার জন্য যে স্কার্ফ ব্যবহার করে থাকে তাকে হিজাব বলে। কিন্তু ফ্রান্সে কয়েক দশক ধরেই এটা বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ফরাসি সরকার যে তথাকথিত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ বিরোধী’ আইন আনতে চাচ্ছে তারই অংশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিলো সিনেট।
এর আগে, ২০১১ সালের এপ্রিলে ফ্রান্স নারীদের হিজাব অবৈধ করে বোরকা বা নিকাব পরা মুসলিম মহিলাদের জন্য জরিমানা আরোপ করে এবং অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক এবং বুলগেরিয়াসহ অনেক ইউরোপীয় দেশে একই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং ইতালি এবং স্পেনের কিছু অংশেও হিজাব সম্পর্কিত আংশিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে, ফ্রান্সে ১৮ বছরের কম বয়সী মুসলিম কিশোরীদের প্রকাশ্যে হিজাব পরা নিষিদ্ধের প্রস্তাব সিনেটে পাশ হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এর বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘# হ্যান্ডসঅফমাইহিজাব’ লিখে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন অনেকে।
জানা যায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিতর্কিত পৃথকীকরণ বিলের অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ফরাসি সিনেট। এই বিল আইন হয়ে গেলে ১৮ বছরের কম বয়সী ফ্রান্সে বসবাসরত মুসলিম কিশোরীদের জনসম্মুখে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হবে। এই আইনের বিরোধিতা করেছেন অনেকে। প্রস্তাবিত এই আইনকে ‘ইসলামবিরোধী আইন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন অনকে। এর মাধ্যমে মুসলিম সংখ্যালঘুদের একপেশে করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
টুইটারে মানার নামে একজন লিখেছেন, ‘ফ্রান্সে ১৫ বছর বয়সীদের যৌনতায় সম্মতি আছে। আর ১৮ বছরের কম বয়সীদের হিজাব পরার অনুমতি নেই। এটি হিজাববিরোধী কোনো আইন নয়। এটি ইসলামবিরোধী আইন। #হ্যান্ডসঅফমাইহিজাব, #ফ্যান্সহিজাবব্যান।’ নাজওয়া জেবিয়ান নামে একজন লিখেছেন, ‘জোর করে কাউকে হিজাব পরানো যেমন অন্যায়, তেমনি জোর করে কাউকে হিজাব খুলতে বাধ্য করাও অন্যায়। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
দর্শনা নিউজ 24/এইচ জেড
Views: 3
Leave a Reply