জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। লিও ক্লাব অফ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ওয়ান প্লাসের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে কিছু মেইন পয়েন্টে ভাড়ার চার্ট সম্বলিত ব্যানার লাগানো হয়। কিন্তু রিকশা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রাতের অন্ধকারে কিছু দুষ্কৃতিকারী ৩৫ টি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে।
জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে জাবিতে ভর্তিচ্ছুদের থেকে মাত্রাতিরিক্ত রিকশা ভাড়া আদায় করার ঘটনা ঘটে। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় লিও ক্লাব অফ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ওয়ান প্লাসের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গত বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত রিকশা ভাড়ার ৩৫টি ব্যানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টানানো হয়।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বল্প দূরত্বের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। আলবেরুনী হল, পুরাতন কলা ভবন, বিজনেস স্টাডিস অনুষদ, শহীদ সালাম বরকত হল, জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এই জায়গাগুলো বেশি ভাড়া আদায় করার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে এক রিকশায় উঠে ফার্মাসি বিভাগে পৌঁছার পর বিশ টাকা দিলে রিকশাওয়ালা ভাড়া নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তিনি ১০০ টাকা দাবি করেন। পরে রিকশাওয়ালার সঙ্গে অবিভাবকের বাগবিতণ্ডা শুরু হলে কিছু শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে চলে আসেন। পরবর্তীতে ৫০ টাকা দিয়ে তাকে বিদায় করা হয়।
ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ব্যাপারে লিও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল মাহমুদ বলেন, বহিরাগতদের সুবিধার জন্য লিও ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষার আগের দিন সারারাত কাজ করে ৩৫ টি ব্যানার টানানো হয়েছিল। সবগুলো হলের সামনে, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, মুরাদ চত্বর, প্রধান গেট, বিশ মাইল গেট, প্রান্তিক গেট, সবগুলো ফ্যাকাল্টি সামনে, শহীদ মিনার, টিএসসি, চৌরঙ্গী ও টারজান পয়েন্টে লাগানো হয়। এখন সবগুলো ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। দুই থেকে তিন চারটা ভালো আছে। নাম না জানা এক ব্যক্তি জানায় তিনি টারজান পয়েন্টে এক প্যাডেল চালিত রিকশাচালককে এসব ছিঁড়তে দেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, রিকশাচালক ও রিকশা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা এ কাজটি করেছে।
প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন,আমি আজ দুপুরেই জেনেছি। আমি খোঁজ লাগিয়েছি। ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার তথ্য সঠিক। আমি সবই অবগত আছি। আমি টোটাল সিকিউরিটি লাগিয়ে দিয়েছি। আজকে রাতে যারা ডিউটিতে আছে তাদেরকে বলে দিয়েছি গোপন তথ্যের মাধ্যমে সবকিছু খুঁজে বের করতে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল- হাসান বলেন, এই ক্লাবের সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি। আমি জানি না, তারা কোথায় কোথায় কি জিনিস লাগিয়েছে। তবে লিও ক্লাবের উপদেষ্টা বিকেলে আমাকে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার তথ্য জানিয়েছিল। আমার কমিটিকে বলে দিয়েছি তারা খোঁজ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই চার্ট কোথায় লাগিয়েছিল, কি লাগিয়েছিল, এগুলো আমি জানি না। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে লাগিয়েছে বলে মনে হয় না। যোগাযোগ করুক আর না করুক, এটা একটি ভালো কাজ। আমি লিও ক্লাবের কাজকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। তারা ভাল কাজ করছে, শিক্ষার্থীদের মঙ্গল করার চেষ্টা করছে। আমরা এটাকে অ্যাপ্রিসিয়েট করি।
Views: 8
Leave a Reply