1. nasiralam4998@gmail.com : admi2017 :
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০০ অপরাহ্ন

কুমিল্লায় আশ্রয়ের সন্ধানে মানুষ, বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৯ বার

পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে কুমিল্লায় অধিকাংশ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এ জেলায় প্রায় ১২ লাখ মানুষ। অন্যদিকে, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কিছু এলাকায় পানি কমে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে, সেখানে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট।

যেসব এলাকায় পানি বাড়ছে, সেখানে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে মানুষের ঢল নেমেছে। কুমিল্লার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া, নাঙ্গলকোট উপজেলার অনেক বাড়ির পুরো নিচতলাই তলিয়ে আছে। বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা।

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় বুড়িচং ও নাঙ্গলকোট উপজেলার ভরাসার, ইছাপুরা, ষোলনল, রায়কোট, মাহিনী মহিষমারা, খাড়াতাইয়া, গাজীপুর ও বাকশিমুল এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।\

কুমিল্লার অধিকাংশ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় সড়কপথে যাতায়াত বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে, তারা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে হাজার হাজার পরিবার। পানির তীব্র স্রোত এবং নৌকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

চুলা জ্বলছে না। তাই, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণ তৎপরতা শুরু করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ বানভাসিদের।

কুমিল্লার অধিকাংশ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় সড়কপথে যাতায়াত বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে, তারা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে হাজার হাজার পরিবার। পানির তীব্র স্রোত এবং নৌকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

চুলা জ্বলছে না। তাই, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণ তৎপরতা শুরু করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ বানভাসিদের।

বসতভিটা ছেড়েছেন বাকশিমুল এলাকার মামুন সর্দার। তিনি বলেন, ‘বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে আসতে কষ্ট হচ্ছে। জীবন বাঁচাতে আজ সবাইকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম।’

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এত পানি জীবনেও দেহি নাই। আল্লায় আর কী কী দেহাইবো!’

এদিকে, গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবরে পরিবারের ছয় সদস্য ও কয়েকটি হাঁস-মুরগি নিয়ে রাতেই বাঁধে আশ্রয় নেন কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার বুরবুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। রাত থেকে পলিথিন দিয়ে ঘেরা একটি স্থানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকছেন তিনি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারি কোনো খাদ্য সহায়তা পাইনি। শহর থেকে আসা একজন লোক রুটি-কলা দিয়েছে।

পাশে আশ্রয় নেওয়া প্রতিবন্ধী বিধবা হেলেনা তার বাড়ি দেখিয়ে বলেন, দুই মেয়ে নিয়ে বাঁধে উঠে জীবন রক্ষা করেছি। কিছুই আনতে পারিনি। ঘরে যা ছিল সবই পানির নিচে। বাঁধে আশ্রয় নেওয়া অন্য লোকজনেরও একই অবস্থা।

বাঁধে আশ্রয় নেওয়া সানজিদা বেগম বলেন, রাতে বাঁধ ভাঙার পর থেকে এখনো প্রশাসনের কাউকে তো দেখছি না। বাঁধ ভাঙার আগে বিকেল থেকেই প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়, কেউ সহায়তায় এগিয়ে আসেনি।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, বন্যাদুর্গতদের জন্য এ উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সকাল পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬০ হাজারের বেশি পরিবার। সংখ্যা আরও বাড়ছে। বাঁধ ভেঙে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের মানুষ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুটি আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, ‘কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১৮টি ইউনিয়নের ৭ লাখের বেশি মানুষ। আমরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। সহায়তা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’

জেলার সিভিল সার্জন নাসিমা আক্তার বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় ২২৭টি চিকিৎসক দল কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছেন তারা।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বলেন, গোমতী নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। দুপুর ২টার দিকে পানি বিপৎসীমার ১০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর বলেন, বন্যাকবলিত মানুষদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ চলছে।  দুর্গত এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনো খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি।

এর আগে অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া নামক স্থান দিয়ে বাঁধ ভেঙে যায়।

 

Views: 2

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..