ক্রীড়া ডেস্ক : ইউরো ২০২০ কে সামনে রেখে ফ্রান্সের প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন করিম বেনজেমা। এর মাধ্যমে দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা স্ট্রাইকারের। কে সামনে রেখে ফ্রান্সের প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন করিম বেনজেমা। এর মাধ্যমে দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা স্ট্রাইকারের।
২০১৬ সালের ইউরোর আগে বাদ পড়েন ৩৩ বছর বয়সী বেনজেমা। কিন্তু দিদিয়ের দেশ্যমের বিবেচনায় আসন্ন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বকাপজয়ী কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আঁতোয়ান গ্রীজম্যানের পাশাপাশি ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার।
টুইটারে এ সম্পর্কে বেনজেমা বলেছেন, ফ্রান্স দলে প্রবেশ করতে পারা এবং আমার উপর আস্থা রাখাটা সত্যিই গর্বের। এজন্য আমি পরিবার, বন্ধু, ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এবং অবশ্যই তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাকে সবসময়ই সমর্থন করেছে এবং প্রতিদিনই আমাকে শক্তি যুগিয়েছে।
ফ্রান্সের জার্সি গায়ে ৮১টি ম্যাচে এ পর্যন্ত ২৭ গোল করেছেন বেনজেমা। সম্প্রতি তিনি দেশটির প্লেয়ার্স এসোসিয়েশনের বিবেচনায় মৌসুমের সেরা ফরাসী খেলোয়াড় (যিনি বিদেশে খেলে থাকেন) হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এবারের মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২৯টি গোল করেছেন।
২০১৮ সালে ক্রিস্টিয়ানো রোনালো মাদ্রিদ ছাড়ার পর তিন মৌসুমেই তিনি ২০ গোলের অধিক গোল করেছেন।
দেশ্যম বলেন, আমি কখনই বেনজেমার সম্পর্কে কোন ধরনের বাজে মন্তব্য করিনি। প্রথম থেকেই তার সঙ্গে আমার এক ধরনের বিশ্বাসের সম্পর্ক ছিল। অতীতে কি হয়েছে তা নিয়ে আমি ভাবতে চাইনা।
আগামী ১৬ জুন মিউনিখে তিনবারের বিজয়ী জার্মানীর বিপক্ষে ইউরো মিশন শুরু করবে ফ্রান্স। চারদিন পর বুদাপেস্টে তাদের প্রতিপক্ষ হাঙ্গেরি। আগামী ২৩ জুন গ্রুপ-এফ’র শেষ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের মোকাবিলা করবে দেশ্যম বাহিনী।
বেনজেমাকে ছাড়া লেস ব্লুসরা গত ছয় বছরের নিজেদের দারুণভাবে প্রমান করেছে। ঘরের মাঠে ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে খেললেও পর্তুগালের কাছে পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা ঘরে তুলে।
সময়ের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন হওয়ার পরও অযাচিত এক কারণে দেশের হয়ে মাঠে নামা হচ্ছিল না বেনজেমার। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার শেষ হতে যাচ্ছে। ফ্রান্সের হয়ে বেনজেমা সবশেষ খেলেন ২০১৫ সালের অক্টোবরে। আর্মেনিয়ার বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে ফরাসিদের জয় পাওয়া সেই ম্যাচে জোড়া গোলের পাশাপাশি একটি গোলে এসিস্টও করেছিলেন। এর কিছুদিন পরই বেনজেমার বিরুদ্ধে জাতীয় দলের সতীর্থ ম্যাথিউ ভালবুয়েনাকে ‘সেক্স টেপ’ দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ ওঠে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ফ্রান্স দল থেকে দেশের হয়ে ৮১ ম্যাচে ২৭ গোল করা এই তারকাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও দেশের হয়ে খেলতে না পারার হতাশা মাঝেমধ্যে পেয়ে বসত বেনজেমাকে। ২০১৬ ইউরোয় তাকে দলে না রাখায় কোচেরও সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
বলেছিলেন, ফ্রান্সের বর্ণবাদী একটা অংশের চাপে মাথানত করেছেন দেশ্যম।
দেশটির বিশ্বকাপ জয়ী কোচ ও সাবেক খেলোয়াড় দেশ্যমও বলেছিলেন, বেনজেমার অমন মন্তব্য কখনও ভুলবেন না তিনি। তবে ভবিষ্যতে যে ৩৩ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারকে দলে নেবেন না, তাও কখনো বলেননি তিনি।
বেনজেমাকে দলে নেয়ার বিষয়ে দেশ্যম বলেন, আমাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এরপরই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার কিছুই আমি এখানে বলব না, এটা একান্তই আমাদের বিষয়। আমার এটা প্রয়োজন ছিল, তারও দরকার ছিল।
ফ্রান্স দল
গোলরক্ষক : হুগো লরিস (টটেনহ্যাম হটস্পার), মাইক মিয়াঁ (লিল), স্তিভ মাদাঁদাঁ (অলিম্পিক মার্সেই)
ডিফেন্ডার : লুকাস দিনিয়ে (এভারটন), লিও দুবয়ঁ (অলিম্পিক লিওঁ), লুকা এরনঁদেজ (বায়ার্ন মিউনিখ), জুল কুন্দে (সেভিয়া), প্রেসনেল কিম্পেম্বে (পিএসজি), ক্লেঁমো লংলে (বার্সেলোনা), বাঁজামাঁ পাভার্দ (বায়ার্ন মিউনিখ), রাফায়েল ভারানে (রিয়াল মাদ্রিদ), কুর্ত জুমা (চেলসি)
মিডফিল্ডার : এনগোলো কঁতে (চেলসি), তুমা লুমা (আতলেতিকো মাদ্রিদ), পল পগবা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), আদ্রিওঁ রাবিও (জুভেন্টাস), মুসা সিসোকো (টটেনহ্যাম হটস্পার), কোরোঁতাঁ তোলিসো (বায়ার্ন মিউনিখ)
ফরোয়ার্ড : উইসাম বেন ইয়েদের (মোনাকো), করিম বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ), কিংসলে কোমান (বায়ার্ন মিউনিখ), উসমান দেম্বেলে (বার্সেলোনা), অলিভিয়ের জিরুদ (চেলসি), অঁতোয়ান গ্রিজমান (বার্সেলোনা), কিলিয়ান এমবাপ্পে (পিএসজি), মার্কাস থুরাম (বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ)।
দর্শনা নিউজ 24/এইচ জেড
Views: 5
Leave a Reply